মেহরাজ রাব্বি।। চট্টগ্রামে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের ওপর তাঁরই দলের কর্মীরা হামলা করেছে। ভাবা যায়! শুধু গ্রুপিংয়ের কারণে দলেরই সিনিয়র নেতার গায়ে হাত তুলতেও তারা দ্বিধা করেনি।
আমি যতদূর মনে করতে পারি, আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে গ্রুপিং বা অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকলেও নিজেদের কোনো কেন্দ্রীয় নেতার ওপর সরাসরি হামলার ঘটনা ঘটেনি। বিএনপিতে কেন ঘটছে?
কারণ স্পষ্ট এখানে আদর্শের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে “পীরতন্ত্র”।আপনি যতই ত্যাগী হন, দলের জন্য কাজ করুন, ত্যাগ স্বীকার করুন কোনো পীর না ধরলে আপনার মূল্য শূন্য। পদ-পদবি পেতে হলে কাউকে গুরু মানতেই হবে, তার বাজার-সদাই করতে হবে, প্রয়োজনে তাঁর ছেলেমেয়েদের স্কুলের খাতা কিনে দিতে হবে তবেই আপনি ‘যোগ্য’ হবেন। না হলে আপনি শহীদ জিয়ার আদর্শে চললেও আপনাকে কেউ ‘পুছবে’ না।
চট্টগ্রামের ঘটনাটা তো আসলে দুই গ্রুপের দুই পীরের খেলা। এমন খেলাই এখন বিএনপির সর্বত্র ঢাকা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যন্ত। যার পীর যত শক্তিশালী, তার পদও তত দ্রুত।
সত্যি বলতে বিএনপির সামনে মহাদুর্যোগ অপেক্ষা করছে।এখন যা হচ্ছে, তা কেবল রিহার্সাল। মনোনয়ন বণ্টনের সময় হবে মূল খেলা। সেখানে দেখা যাবে, কীভাবে পীরতন্ত্রে পিষ্ট হয় দলীয় নীতিনির্ধারণ, কীভাবে আদর্শ পরাজিত হয় সুবিধাবাদের কাছে।
সুতরাং, বিএনপি যদি এখনই এই গ্রুপিং, পীরতন্ত্র আর ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতি বন্ধ না করে তাহলে সামনে এক ভয়াবহ আত্মধ্বংসী অধ্যায়ই অপেক্ষা করছে।