নিজস্ব প্রতিবেদক।।চাঁদাবাজি না পেলে ব্যবসায়ীও আজ দেশে “শত্রু”! পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মুদি ব্যবসায়ী মো. শামীম জমাদ্দার সেই শত্রুতারই শিকার। মাত্র পাঁচ লাখ টাকা না দেওয়ায় কুখ্যাত চাঁদাবাজ সোহাগ ফরাজী (৪২) রবিবার সকালে বাজারের মাঝখানে দা হাতে নেমে পড়ে, যেন সিনেমার খলনায়ক, পার্থক্য শুধু এখানে রক্তটা আসল!
ঘটনা মঠবাড়িয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বন্দর গরুরহাট এলাকায় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে। এজাহার সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে সোহাগ তার সহযোগী ৩–৪ জনকে নিয়ে পথরোধ করে শামীমের ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে পাশের দোকান থেকে ধারালো দা এনে ‘মাথায় কোপ মারার’ চেষ্টা করে, কিন্তু শামীমের আত্মরক্ষায় হাত উঁচু হওয়ায় কোপ গিয়ে পড়ে গলায়। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শামীম।
স্থানীয়রা ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে মঠবাড়িয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা “প্রাণে বাঁচলেও অবস্থা সঙ্কটজনক” বলে দ্রুত পাঠিয়ে দেন বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম)।
চাঁদা না দিলে কুপ-শামীমের অপরাধ ব্যবসা করা!
আহতের পরিবার জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সোহাগ ফরাজী তাদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল।চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শুরু হয় হুমকি, তারপর হামলা,শেষমেশ “গলা কাটা শিক্ষা”! স্থানীয়দের ভাষায়, সোহাগ ফরাজী নাকি ছোটখাটো নেতা”যার নাম শুনলেই থানার মোবাইল ফোনের রিংটোন নাকি বন্ধ হয়ে যায়।
একজন ব্যবসায়ী বলেন..
ওর সাহস দেখে মনে হয়, থানা পুলিশই তার নিরাপত্তা প্রহরী। আজকে তো গলা কেটে ফেলত, কাল হয়তো বাজারই দখল করত!”
পুলিশের অভিযান ও জনমতের প্রশ্ন..
মঠবাড়িয়া থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন অবশ্য বলেন, ঘটনার পর পরই প্রধান অভিযুক্ত সোহাগ ফরাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।
তবে এলাকাবাসীর প্রশ্ন থেমে নেই..
এতদিন চাঁদাবাজির অভিযোগে থানার দরজায় কয়বার কড়া নাড়লেও সোহাগকে ধরা হয়নি কেন? কারা তাকে বাঁচিয়ে রাখছিল? গরুরহাটে দিনের বেলায় দা হাতে ঘুরে বেড়ানো লোকটা পুলিশের চোখ এড়িয়ে গেল কেমন করে?
থানা থেকে হাসপাতাল, হাসপাতাল থেকে বিচার..
আহতের পিতা মো. আ. হালিম জমাদ্দার বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। কিন্তু জনগণের ভয়,এ মামলাও যেন “আসামির জামিনের কাগজে” হারিয়ে না যায়।
মঠবাড়িয়ার মানুষ এখন একটাই প্রশ্নে মুখর, চাঁদা না দিলে কি এখন ব্যবসায়ীর রক্তও বৈধ?”একজন প্রবীণ শিক্ষক ক্ষোভভরে বলেন,এই দেশে অপরাধীরা টাকা দিয়ে আইন কেনে, আর সাধারণ মানুষ রক্ত দিয়ে বিচার চায়।”











