নিজস্ব প্রতিবেদক।। বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ (৫৫) হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়ভাবে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটলেও মামলায় জামায়াতে ইসলামীর একাধিক নেতা-কর্মী ও স্থানীয় মসজিদের ইমামকে আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে করফাকর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে ইউনিয়ন কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফের সঙ্গে স্থানীয় বিএনপি কর্মী দেলোয়ার হোসেন ঘরামীর কথা কাটাকাটি হয়।একপর্যায়ে দেলোয়ার তাকে কয়েকটি থাপ্পড় মারলে লতিফ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ইব্রাহীম হাওলাদার বলেন..
লতিফকে থাপ্পড় মেরেছিল দেলোয়ার। কোনো সংঘবদ্ধ হামলার ঘটনা ঘটেনি। আমরা উপস্থিতরা দু’জনকে আলাদা করে দিয়েছিলাম। আমি নিজেই লতিফকে হাসপাতালে নেওয়ার কাজে সহযোগিতা করি। অথচ আমাকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। এমনকি ঘটনাস্থলে না থাকা জামায়াত নেতাদেরও আসামি বানানো হয়েছে।”
এ ঘটনায় করফাকর বায়তুল আমান জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা জাহিদুল ইসলাম বলেন,মারামারির সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই, তখন লতিফ ভাইকে ইতোমধ্যেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অথচ আমাকেও হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে।”
অন্যদিকে, সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মোহাম্মদ ফেরদাউস দাবি করেন, ঘটনার সময় আমি এলাকায়ই ছিলাম না। তারপরও আমাকে ও জামায়াতের আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। বিএনপি রাজনৈতিক ফায়দা নিতে এ কাজ করেছে।”
এদিকে নিহতের স্ত্রী পারভীন বেগম জানান, তিনি মাত্র তিনজনের নাম উল্লেখ করেছিলেন। কারা কীভাবে অন্য নামগুলো যুক্ত করেছে তা তিনি জানেন না।আমি শুধু ন্যায়বিচার চাই,”বলেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, যাদের আসামি করা হয়েছে তারা ঘটনাস্থল বা কাছাকাছি ছিলেন।কাউকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসানো হয়নি।”
বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ মৃধা বলেন, আমরা এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনো রাজনীতি করছি না। লতিফ ছিলেন আমাদের নিবেদিতপ্রাণ নেতা। আর অভিযুক্ত দেলোয়ার বিএনপির কর্মী নন, তিনি জামায়াতপন্থী।”
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আরাফাত হাসান বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। নির্দোষ কেউ আসামি হলে তদন্তে তা বের হয়ে আসবে। একইসঙ্গে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে আশ্বাস দেন বানারীপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) শতদল মজুমদার।
উল্লেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিহতের স্ত্রী পারভীন বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর পরদিন ভোরে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তুহিনকে ভোলা থেকে র্যাব-৮ গ্রেপ্তার করে।











