ইমরান হোসেন।।বরিশাল সদর হাসপাতাল এখন রোগীদের জন্য নয়, বরং চোরেদের জন্য এক স্বর্গরাজ্য। হাসপাতালে গেলে মনে হয়, হাসপাতাল নয়, বরং এক “নাই-মহল”।
[]এখানে সবকিছুই নাই যেমন…
[]সিকিউরিটি নাই
[]গার্ড নাই
[]নৈশপ্রহরী নাই
[]গেট নাই
[]সমস্যার সমাধান নাই
[]অর্থাৎ…যা দরকার, সব নাই।
[রাত হলেই চোরদের ওপি ডি]
রাত নামলেই হাসপাতালের ওয়ার্ডে রোগী কম, চোর বেশি। দিনের বেলায় ডাক্তাররা প্রেসক্রিপশন দেন, আর রাতে চোরেরা ‘তার কাটিং সার্জারি’ করে। সম্প্রতি ৮ তারিখ রাতে একদল চোর হাসপাতালের একটি ভবনে “অপারেশন তার কাট” চালায়। তবে ভাগ্য খারাপ, লোকজন দেখে ফেলায় চোরেরা পালিয়ে যায়।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল হাল ছেড়ে দিয়ে বলেছেন,চুরি হয়, লোকজন দেখে, আমি শুনি, তারপর আর কিছু করার থাকে না। কারণ সিকিউরিটি নাই, নৈশপ্রহরী নাই।”অর্থাৎ এখানে শুধু রোগীর প্রেসক্রিপশন নয়, ডাক্তারদের মুখেও এখন “নাই” প্রেসক্রাইব করা হয়!
[দেয়াল আছে, কিন্তু শিশুদের লাফানোর মতো]
হাসপাতালের চারপাশে দেয়াল আছে, তবে সেটা আবার দেয়াল না হয়ে যেন বেড়ার গেড়া। ছোট বাচ্চারাও অনায়াসে লাফিয়ে ঢুকতে পারে। গেট নেই, তাই যার যা খুশি তাই। রোগী আসে চিকিৎসার জন্য, চোর আসে সংগ্রহশালার জন্য।
[ভবন আছে সংস্কার নেই]
স্টাফ নওয়াব হোসেন জানালেন….
“ভবন ঠিক করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু পানি এখনো পড়ে।”অন্যদিকে কোয়ার্টারের অবস্থা এমন, যেন সেখানে বসবাস মানে “দুর্ভোগের থেরাপি”। পাঁচটি পরিবার, ২৫–৩০ জন মানুষ, আর সমস্যা গুনে শেষ হয় না। সাবেক স্টাফ জহিরুল ইসলাম যোগ করেন,পুরাতন ভবন কিছুটা মেরামত হয়েছে, কিন্তু সমস্যা এখনো রয়ে গেছে।”অর্থাৎ হাসপাতালের ভবনও রোগীর মতো,চিকিৎসা নিলেও পুরোপুরি সুস্থ হয় না।সিভিল সার্জনের আশ্বাস: চেষ্টার ওপর ভরসা!
বরিশাল সিভিল সার্জন ডা. এস. এম. মনজুর-এ-এলাহী বলেছেন,সমস্যার কথা আমিও শুনেছি। সমাধানের চেষ্টা করছি।”শুনে মনে হয়, চেষ্টা শুরু হয়েছে ১৯৭১ সাল থেকে, কিন্তু শেষ হবে কবে সেটা নিয়ে ইতিহাসের বইও নীরব।
বরিশাল সদর হাসপাতাল এখন এমন এক জায়গা, যেখানে…রোগীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে,ডাক্তাররা অসহায়ত্বে ভোগে,আর চোরেরা ‘ভিআইপি রোগী’ হয়ে দিব্যি চিকিৎসা নেয়!