অনেকের শাসন দেখেছেন-এবার ইসলামপন্থীদের সুযোগ দিন।
পীর সাহেব চরমোনাই!

নিজস্ব প্রতিবেদক।। আমরা দরজা বন্ধ করিনি, সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে আহ্বান,আসুন, কুরআনের আইন প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হবার আহবান জানান অধ্যাপক মুজিবুর রহমান!

বরিশাল বেলস পার্ক আজ রীতিমতো মানবসমুদ্রে রূপ নেয়।আটদলীয় জোটের ৫ দফা দাবির কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২ ডিসেম্বর ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয় বরিশাল বিভাগীয় সর্ববৃহৎ সমাবেশ। দুপুর থেকে লাখো মানুষের ঢল নামতে থাকে, চারপাশ জনতার স্লোগানে থরথর। প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) এবং সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। আটদলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পীর সাহেব চরমোনাইয়ের আগুনঝরা বক্তব্য..
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন,“যারা ক্ষমতার লোভে দেশের হাজারো মায়ের বুক খালি করেছে, যারা চুরি, পাচার আর প্রতারণায় বারবার ফার্স্ট হয়েছে,তাদের জায়গা বাংলার মাটিতে হবে না। তাদের উৎখাত করতেই হবে।”
তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানান,দেশের অশান্তি সৃষ্টি, লুটপাট, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি,এসবের সাথে জড়িতদের সময় শেষ। যারা বছরের পর বছর ক্ষমতায় থেকে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তাদের বিরুদ্ধে দেশবাসী এবার রাস্তায় নেমেছে।

হাসিনার পতন প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন,তিনি বলেছিলেন শেখ হাসিনা পালায় না। কিন্তু রান্না করা খাবারও খেয়ে যেতে পারেননি। যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে। নইলে একই পরিণতি অপেক্ষা করছে।

তিনি আরও ঘোষণা দেন,আপনারা অনেক শাসন দেখেছেন এবার ইসলামকে সুযোগ দিন। ইসলামপন্থীরা ক্ষমতায় গেলে চাঁদাবাজি থাকবে না, অবিচার থাকবে না, খুনোখুনি থাকবে না, দেশের টাকা বিদেশে যাবে না। আমরা সুখী-সমৃদ্ধশালী ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র উপহার দেব ইনশাআল্লাহ।সাথে অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়া এবং জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ তাহেরের সুস্থতা কামনা করেন তিনি।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের ঐক্যের ডাক…
জামায়াতের নায়েবে আমীর তার বক্তব্যে বলেন,একসময় পীর নিয়ে বিরূপ ধারণা ছিল। কিন্তু আজ চরমোনাই পীর সাহেবের পাশে বসে মনে হলো,তিনি শুধু পীর নন, তিনি ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের একজন মহাবীর।

তিনি হিজবুল্লাহ ও হিজবুশ শয়তানের কুরআনিক প্রসঙ্গ তুলে বলেন,আমরা আল্লাহর দলে থাকতে চাই। মানবরচিত আইনের সংবিধান নয়,কুরআনের আইন চাই। মদিনার ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতেই আমরা আটদল এক হয়েছি। তিনি আরও বলেন,একটি দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কিন্তু যেসব দল তাদের সহযোগিতা করেছে, তারাও নিষিদ্ধ হওয়া উচিত। আগামী নির্বাচন সামনে,আটদলকে বিজয়ী করুন, যাতে ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন করা যায়।
এবার হবে সমমনা ৮ দলের নেতৃত্বে কল্যাণের বাংলাদেশ!
মুজিবুর রহমান আরও আহ্বান জানান, আল্লাহর আইন ছাড়া যারা রাষ্ট্র চালায় তারা জালেম, তারা ফাসেক। আমরা কারও দরজা বন্ধ করিনি। সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে আহ্বান,একসাথে আসুন, দেশ গড়ি। আওয়ামী লীগ–বিএনপির যুগ শেষ,এবার সমমনা আটদল গড়বে নতুন বাংলাদেশ।
অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যে উত্তাল হয়ে ওঠে সমাবেশ!

মাঠে উপস্থিত লাখো মানুষের সামনে একে একে বক্তব্য দেন,ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই)
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় সদস্য ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, অধ্যক্ষ মাওলানা জহির উদ্দিন মু. বাবর,খেলাফত মজলিসের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল বাসির আজাদ, মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন,নেজামে ইসলাম পার্টির আমীর মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী,খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, সেক্রেটারি নিজামুল হক নাঈম, জাগপার সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন!
সবার বক্তব্যে ছিল একই দাবি,ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র গঠন, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনা।
বরিশালে আটদলের শক্তি প্রদর্শন-নতুন রাজনীতির ইঙ্গিত!

বরিশালের এই বিভাগীয় সমাবেশ শুধু মানুষের উপস্থিতির দিক থেকেই নয়, ইসলামী রাজনৈতিক শক্তির ঐক্যের ঘোষণা হিসেবেও দেশব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।লাখো মানুষের ঢল দেখিয়ে আটদল বার্তা দিয়েছে,বাংলাদেশে নতুন এক রাজনৈতিক বাস্তবতা তৈরি হচ্ছে।












